অভিবাসন (Migration)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ভূগোল ও পরিবেশ - জনসংখ্যা | | NCTB BOOK
2

জীবন ধারণের মৌলিক ও নানা প্রয়োজনে বহুলোক বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। স্থায়ী বসবাসের উদ্দেশে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে অন্য শহরে এবং একদেশ থেকে অন্যদেশে অভিগমন করে। ফলে কোথাও জনসংখ্যা কমে আবার কোথাও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। অভিবাসনে বাস্তুত্যাগীদের পরিমাণ বৃদ্ধি, গ্রাম বা শহরের মোট জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি এবং জনসংখ্যার কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। এতে সমগ্র দেশের জনসংখ্যা বণ্টনে পরিবর্তন দেখা দেয়।
সাধারণত কর্মের মজুরি, পণ্যের মূল্য, চাষ পদ্ধতি, বাজার ব্যবস্থা, শহর বা গ্রামীণ উন্নয়ন, শিক্ষা ও সামাজিক পরিবেশের উন্নয়ন প্রভৃতি অভিবাসনকে প্রভাবিত করে। অনেক দেশে জন্মহার বেশি হয়। আবার জন্মহার বেশি এমন দেশের কিছু লোক অভিগমন করলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি নাও থাকতে পারে।
তাই দেখা যাচ্ছে যে, কোনো দেশের জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি ঐ দেশের জন্মহার, মৃত্যুহার ও অভিবাসন দ্বারা নির্ধারিত হয়। জন্মহার, মৃত্যুহার ও অভিবাসন প্রত্যেকটি বিষয় একটি অপরটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই শুধু জন্মহার বা শুধু মৃত্যুহার বা অভিবাসন দিয়ে কোনো দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি পরিমাপ করা যায় না। জনসংখ্যার সঠিক তথ্য বুঝতে হলে এই তিনটি বিষয়ই সমানভাবে পর্যালোচনা করতে হয় । প্রকৃতি অনুযায়ী অভিবাসনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা—

১। অবাধ অভিবাসন (Voluntary migration) : নিজের ইচ্ছায় বাসস্থান ত্যাগ করে আপন পছন্দমতো
স্থানে বসবাস করাকে অবাধ অভিবাসন বলে।

২। বলপূর্বক অভিবাসন (Forced migration) : প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে কিংবা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে। গৃহযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের কারণে বা যুদ্ধের কারণে কেউ যদি অভিগমন করে তবে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে। বলপূর্বক অভিবাসনের ফলে যে সমস্ত ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও স্থায়ীভাবে আবাস স্থাপন করে তাদেরকে বলে উদ্বাস্তু (Refugee)। আর যারা সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমতো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে তাদেরকে বলে শরণার্থী (Emigre)। 

কাজ : রিনা ভৌমিকের পরিবার, সাদিয়ার পরিবার, সোহাগ, রবীন ও আরও অনেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গমন করে। এর মধ্যে সাদিয়ার পরিবার, সোহাগ ও রবীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে চলে আসে। তাহলে নিচের ছকটি পূরণ কর।

# এটা কোন ধরনের অভিবাসন?

# এখানে উদ্বাস্তু কারা ?

#এখানে শরনার্থী কারা ?

 #অভিবাসী কে কে?

আবার তোমরা দেখবে দেশের বা রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে গ্রাম (Rural) থেকে শহরে (Urban) অথবা শহর থেকে গ্রামে অভিগমন ঘটে। আবার কাউকে কাউকে দেখবে দেশের বাইরে অন্যকোনো রাষ্ট্রে গমন করেছে। তাই স্থানভেদে অভিগমনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

১। রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ (Internal )
২। আন্তর্জাতিক (International)

কাজ : এককভাবে নিচের ছকটি পূরণ কর।

                   অভিগমনের  স্থান         কোন ধরনের  অভিগমন

 ঢাকা             থেকে           চট্টগ্রাম
 ঢাকা             থেকে          আমেরিকা
 ময়মনসিংহ    থেকে            ঢাকা
  বগুড়া           থেকে           ঢাকা

 

 

Promotion